হুন্ডি কি, হুন্ডি ব্যবসা কি হালাল নাকি হারাম জেনে নিন

অর্থসহ কোরআন থেকে ছেলেদের নামের তালিকা ১০০০+

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ হুন্ডি সম্পর্কে অবগত নন। যারা প্রবাসী তারা হুন্ডি সম্পর্কে বেশ অবগত আছেন। অনেকেই জানেন না হুন্ডি ব্যবসা হালাল নাকি হারাম। হুন্ডি কি ও হুন্ডি ব্যবসা কি হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। আপনি যদি হননি ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে কি কি জানতে হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার পর বুঝতে পারবেন হুন্ডি ব্যবসা কি হিন্দি ব্যবসা হালাল নাকি হারাম। 

হুন্ডি কি, হুন্ডি ব্যবসা কি হালাল নাকি হারাম জেনে নিন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা কিভাবে পাঠানো হয়, হুন্ডির উপকারিতা, হুন্ডির অপকারিতা, হুন্ডি ব্যবসা হালাল না হারাম

যারা হুন্ডি ব্যবসা করতে যাচ্ছেন কিংবা সন্ধি ব্যবসা করতেছেন তাদের মধ্যে একটা দ্বিগাদ্বন্দ্ব থেকে যায় হুন্ডি কি আসলেই হালাল নাকি হারাম। দেশের বাহির থেকে যারা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডিতে পাঠাতে চান সে টাকাগুলো কি আদৌ হালাল নাকি হারাম। তাহলে চলুন হুন্ডি সম্পর্কে হুন্ডি কি ও হুন্ডি ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।  

হুন্ডি কি 

হুন্ডি হলো একটি নীতি বহির্ভূত এবং দেশের আইন দ্বারা নিষিদ্ধ অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর ব্যবস্থা। এটি Bill of Exchange বা বিনিময় বিল নামেও পরিচিত। বহুকাল আগে এটি বাণিজ্যিক লেনদেন হিসেবে ব্যবহৃত হতো কিন্তু বর্তমানে এটির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা কম খরচে দেশে টাকা পাঠান তারা সাধারণত হুন্ডি পথ নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশে হুন্ডি একটি অবৈধ ও আইন বিরোধী কাজ। হুন্ডি বাংলাদেশ নিষিদ্ধ রয়েছে যা ব্যবহার করা আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।  

হুন্ডির বাংলা আভিধানিক শব্দ হচ্ছে অর্থ সংগ্রহ করা। বাণিজ্যিক আদান প্রদান বা ঋণ সংশ্লিষ্ট লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত লিখিত এবং শর্তহীন দলিল হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। সহজ কথাই বলতে গেলে একজন থেকে অন্যজনের কাছে নির্দেশিত পরিমান টাকা লেনদেন করাই হলো হুন্ডি। হুন্ডির প্রচলন শুরু হয় মুঘল আমল থেকে। মুঘল আমলে হুন্ডির বেশ প্রচলন ছিল। তবে এর সবচেয়ে বেশি প্রচলন এবং ব্যবহৃত হয় ব্রিটিশ আমল থেকে। বর্তমানে প্রবাসীরা দেশে টাকা পাঠানোর জন্য এই হুন্ডির পথ অবলম্বন করে থাকেন।  

হুন্ডি হচ্ছে একটি অপ্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেটির মাধ্যমে এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা লেনদেন করা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও আফ্রিকার কিছু দেশে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি একটি অনানুষ্ঠান আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান যার একটি অবৈধ পন্থা হিসেবে গণ্য করা হয়।  

হুন্ডির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এক দেশ থেকে অন্য দেশে সহজে টাকা লেনদেন করতে পারে। এটি একটি নন ব্যাংকিং লেনদেন প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এই লেনদেনের মধ্যে কোন ব্যাংক প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকে না। ব্যাংক বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যস্থতা ছাড়া অর্থ লেনদেন হয়। প্রবাসীরা এই হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর খরচ কম বিধায় প্রবাসীরা এই পথ অবলম্বন করে থাকেন।  

সহজ কথাই বলতে গেলে হুন্ডি হল সহজে এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা পাঠানোর মাধ্যম যা একটি অবৈধ পন্থা। হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর জন্য দুটি মাধ্যম থাকে একটি হলো যে টাকা পাঠাবে এবং অন্যজন হল যে টাকা দিবে। 

হুন্ডির মাধ্যমে টাকা কিভাবে পাঠানো হয় 

হুন্ডিতে লেনদেন করার জন্য সাধারণত দুটি পক্ষ থাকে। একটি হচ্ছে ব্যক্তি (যিনি প্রেরক) একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্থানান্তরের জন্য হুন্ডি এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন। এজেন্ট প্রাপকের নিকটবর্তী অন্য একটি লোকের সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রাপকের অর্থ পৌঁছে দেন। 

হুন্ডি ব্যবসা একটি লিখিত শর্তহীন অর্থ লেনদেনের মাধ্যম। গন্তব্যে টাকা পৌঁছানোর জন্য এজেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি দেশের বাহির থেকে হুন্ডিতে টাকা পাঠাতে চান তাহলে আপনাকে সেখানে থাকা প্রথম এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর সে এজেন্টকে আপনি যে পরিমাণ টাকা পাঠাতে চান সেটি দিয়ে দিবেন। পরবর্তীতে সে এজেন্ট দেশে থাকা অন্য এজেন্টকে আপনার টাকা আপনার প্রতিনিধির কাছে পৌঁছে দিতে বলবে। এবং আপনার প্রতিনিধি যোগাযোগ করে সে টাকা সংগ্রহ করবে। মূলত এভাবেই হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানো হয়।  

মনে করুন আপনারা দুই ভাই তার মধ্যে আপনি দুবাইতে থাকেন এবং আপনার ভাই দেশে থাকে। আপনার এক প্রতিবেশী ও আপনার সাথে দুবাইতে অবস্থান করতেছেন। আপনার প্রতিবেশী দেশে অবস্থানরত তার পরিবারের কাছে কিছু টাকা পাঠাতে চাই। মনে করুন তার পরিবারের কাছে সে ১০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা পাঠাবে।

সে ব্যাংকে যোগাযোগ করে জানতে পারল যে সে যদি ব্যাংকে এই ১০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা পাঠাতে চাই তাহলে সৌদি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক ও শুল্ক সব সহ তার খরচ হবে বিশ হাজার টাকা খরচ পড়বে। তার মোট খরচ হবে ১,২০,০০০ টাকা এবং দেশের অবস্থানরত তার পরিবার পাবে ১০০,০০০ টাকা।  

সেটি শুনে আপনি তাকে বললেন সে যদি আপনাকে ১,০৫,০০০ টাকা দেয় তবে সে তার পরিবারকে দেশে ১০০,০০০ টালা দিয়ে দিবে। পরবর্তীতে সে ব্যক্তি চিন্তা ভাবনা করে দেখল যে সে যদি আপনাকে ১০৫,০০০ টাকা দেয় তবে তার ১৫ হাজার টাকা খরচ কমে যাবে। তাই সে আপনাকে ১০৫,০০০ টাকা দিল। দেশে থাকা আপনার ছোট ভাইকে ফোন দিয়ে বললেন তার পরিবারের কাছে যেন ১০০,০০০ টাকা পৌঁছে দেয়।  

এর ফলে আপনার প্রতিবেশীর ১৫,০০০ টাকা খরচ কম হল এবং আপনি পেলেন ৫০০০ টাকা। সাধারণত এভাবেই হুন্ডিতে এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা পাঠানো হয়ে থাকে। কম খরচে দেশে টাকা পাঠানো যায় বিধায় প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকেন।  

আরো পড়ুনঃ কসকল প্রকার বিপদ থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল

হুন্ডির উপকারিতা কি কি জেনে নিন 

হুন্ডি ব্যবহার করার প্রথম প্রধান কারণ হলো এখানে খুব কম খরচে এই দেশে টাকা পাঠানো যায়। প্রবাসীরা অধিকাংশই হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া হুন্ডির উপকারিতা কি কি। হুন্ডি ব্যবহার করলে আমাদের কি কি উপকার আসবে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।   

  • হুন্ডিতে ডলার রেট কিংবা রিয়াল রেট ব্যাংকের তুলনায় বেশি পাওয়া যায়।  
  • দ্রুত দেশে থাকা পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো যায় এবং বন্ধ কালীন সময়েও হাতে হাতে টাকা পাওয়া যায়।  
  • হুন্ডিতে টাকা পাঠানো তুলনামূলক খরচ কম।  
  • প্রবাসীরা খুব অল্প সময় পায় যার কারণে তারা ব্যাংকে নিয়ে টাকা পাঠাতে পারেনা। হুন্ডি ব্যবসায়ীরা টাকা নিয়ে যায় এবং দেশে থাকা পরিবারের কাছে টাকা বুঝিয়ে দেয়। 
  • নির্দিষ্ট পরিমাণের চাইতে বেশি টাকা পাঠাতে গেলে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়। হুন্ডির মধ্যে এই ধরনের কোন ঝামেলা না থাকার কারণে প্রবাসীদের কাছে এটি বেশ উপকারী।  
  • যারা অবৈধভাবে প্রবাসী অবস্থান করছেন তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী। তাদের কোন প্রকার কাগজপত্র না থাকার কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেনা তাই হুন্ডিতে টাকা পাঠিয়ে থাকে।  
  • প্রবাসীদের মতে বাংলাদেশের ব্যাংকে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয় যা তাদের পরিবারের জন্য খুবই কষ্টকর।  
  • ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রণোদনার হার ২.৫% এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হয় না। 
  • প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংশোধন পড়ে আছে বছরের পর বছর তাই তারা বাধ্য হয়ে হুন্ডিতে টাকা পাঠিয়ে থাকে।   

হুন্ডির অপকারিতা কি কি দেখে নিন 

হুন্ডির যেরকম উপকারিতা আছে ঠিক তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। যারা হুন্ডি ব্যবহার করেন তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। হুন্ডি ব্যবসা ব্যাংকিং নিয়মকানুন মেনে চলে না। যার ফলে বাংলাদেশে হুন্ডি ব্যবসা নিষিদ্ধ। হুন্ডি একটি আইন বিরোধী কাজ যার কারণে এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের প্রায় সব দেশে এই হুন্ডি প্রথা নিষিদ্ধ। হুন্ডি ব্যবসায়ের কয়েকটি অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

  • আয়কর রেয়াত পাওয়া যাবে না।  
  • আপনার বৈধ উপার্জন অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।  
  • প্রবাসীরা গ্রাহক হিসেবে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।  
  • হুন্ডিতে পাঠানো আপনার অর্থ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে।  
  • ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। 
  • বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায় যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।  
  • হুন্ডিতে পাঠানো অর্থ এজেন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে যার ফলে আপনার অর্থ ঝুঁকি অবস্থায় থাকে কারণ আপনার পাঠানো
  • অর্থ গুলো আপনার পরিবারের কাছে নাও পাঠাতে পারে।  
  • প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।  
  • অনেক সময় ডলার রেট কিংবা অন্যান্য কারেন্সি এর ভালো রেটে পাওয়া যায় না।  
  • যেহেতু হুন্ডি একটি অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রক্রিয়া সেহেতু যদি আপনার অর্থের কোন ক্ষতি হয় তাহলে তার কোন ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না। অবৈধ হওয়ার কারণে আইনি কোন সাহায্য পাওয়া যাবে না।

হুন্ডি ব্যবসা হালাল না হারাম 

হুন্ডি ব্যবসা হালাল নাকি হারাম আমাদের আজকের পোস্টে মূল বিষয় ছিল এটি। ইসলাম ধর্মে আল্লাহ তা'য়লা ব্যবসাকে হালাল করেছেন। তবে আপনি অবৈধভাবে কোন কিছু উপার্জন করতে পারবেন না। আপনাকে ব্যবসা করলে করতে হবে অবশ্যই ইসলামিক নীতি মেনে তাহলেই আপনার ব্যবসা হালাল বলে বিবেচিত হবে। ইসলামিক শরীয়াহ অনুযায়ী আপনার ব্যবসায়ের মধ্যে ধরনের খারাপ বা ও অনৈতিক কাজ পারবে না। তবে হুন্ডিতে কিছু বিবেচ্য বিষয় আছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক হুন্ডি ব্যবসা হালাল না হারাম। 

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে হুন্ডি ব্যবসা মৌলিকভাবে জায়েজ। তাই হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করাও জায়েজ। কারণ হুন্ডি এক ধরনের মুদ্রা বিনিময় প্রথা। অর্থাৎ এক দেশের মুদ্রার বিনিময়ে অন্য দেশের মুদ্রা বেচাকেনা হয়ে থাকে। এটি ইসলামের শরীয়তে বৈধ। টাকা পাঠানোর বিনিময়ে যে বাড়তি টাকা আদায় করা হয় তা পারিশ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হবে।  

তবে এক্ষেত্রে ও কিছু সত্য মেনে চলতে হবে, লেনদেন চুক্তির বৈঠকে এক পক্ষকে অবশ্যই মুদ্রা হস্তান্তর করত্র হবে। যদি উভয় পক্ষ মুদ্রা হস্তান্তর থেকে বিরত থাকে তাহল্র সেটি ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে না। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, "এই পণ্যগুলো যদি একটি অন্যটি থেকে আলাদা হয় অথবা একই পণ্য না হয়, তবে তোমরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে বিক্রি করতে পারো। তবে তা হতে হবে নগদ" (মুসলিম: ১৫৮৭) 

তবে আমাদের দেশে হুন্ডি একটি অবৈধ মুদ্রা লেনদেন প্রক্রিয়া। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেন অনৈতিক একটি কাজ হিসেবে ধরা হয় বাংলাদেশে। হুন্ডি বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইসলামের নীতি অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ কোন বিষয় যদি কোরআন হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং তা যদি রাষ্ট্রের কল্যাণে প্রণীত হয়ে থাকে, তাহলে তা মান্য করা সব নাগরিকের কর্তব্য ও দায়িত্ব। যেহেতু হুন্ডি ব্যবসা ও এর মাধ্যমে লেনদেন করা থেকে ইসলামিক আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নয় সেহেতু এই আইন মেনে চলা উচিত। কারণ ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী যে বিষয় থেকে বিরত থাকার সুযোগ রেখেছে, অযথা সেই বিষয়ে আইন ভঙ্গ করে কোন কিছু করা ইসলামের শরীয়তে অনুমোদন করে না।  

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন, "আল্লাহর পথে ব্যয় করো, তবে নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখোমুখি করিও না" (সুরা বাকারা, আয়াত ১৯৫) 

বর্তমানে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হুন্ডি ব্যবসা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয় বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেই হুন্ডি ব্যবসা নিষিদ্ধ। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত নয় দেশের নিষিদ্ধ কোন জিনিস ব্যবহার করা। যেহেতু হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ফলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ হয় না এর ফলে বাংলাদেশ হুন্ডিকে নিষিদ্ধ করেছে। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের হুন্ডি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। বাংলাদেশের আইন মেনে চলা উচিত। এই হুন্ডি ব্যবসা কে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশের বাহিরে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। যার ফলে বাংলাদেশে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য ও বিভিন্ন কল্যাণ সাধনের লক্ষে হুন্ডি ব্যবসাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

হুন্ডি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। তবেকোন হাদিস কিংবা কোরআন শরীফে হুন্ডি হারাম এই ধরনের কথা কোথাও উল্লেখ করা নেই। তবুও যেহেতু আমরা মুসলিম এবং আমাদের দেশের আইন এটি নিষিদ্ধ তাই আমাদের এটি মেনে চলা উচিত। এবং হুন্ডির মাধ্যমে কোন ধরনের টাকা পাঠানো উচিত নয়। আপনি একজন দেশের নাগরিক হিসেবে আপনার উচিত দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো চাঙ্গা রাখা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বৈদেশিক রেমিটেন্স নির্ভর। তাই নিজের দেশের কোন ধরনের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থ দেশের কল্যাণ সাধনের যদি কাজে আসে তাহলে আমাদের নিজেদের নিয়ে গর্ব করা উচিত। তাই একজন দেশের সফল নাগরিক এবং ইসলামের শরীয়ত অনুযায়ী আপনাকে এই হুন্ডি থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে ইসলামের শরীয়তে যেহেতু হুন্ডি হারাম এই ধরনের কোন কথা উল্লেখ নেই তাই এটি কি হারাম বলে ভুল হবে। যেহেতু হুন্ডি ব্যবসা ও এর মাধ্যমে লেনদেন করা থেকে ইসলামিক আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নয় সেহেতু এই আইন মেনে চলা উচিত।

রায়হান আইটির শেষ কথা 

প্রিয় রায়হান আইটির পাঠক বৃন্দ আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনাদের ভালো লেগেছে। আমরা চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত আপনাদের মাঝে নতুন কোন কিছু নিয়ে আসার জন্য। আমাদের লেখার আজকের বিষয় ছিল হুন্ডি কি, হুন্ডি ব্যবসা কি হালাল নাকি হারাম এই সম্পর্কে। হুন্ডি কি এবং হুন্ডি ব্যবসা কি হালাল নাকি হারাম এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। কোথাও আমাদের লেখা যদি আপনার বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন। হুন্ডি সম্পর্কিত কোন ধরনের প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের জানাতে পারবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রায়হান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url