বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার ১০ টি কার্যকরী নিয়ম Bkash Agent Business
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার ১০ টি কার্যকরী নিয়ম-বিকাশ কি সে সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত আছি। বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা লেনদেন করা যায়। লেনদেন করা সহজ বলে বাংলাদেশ অধিকাংশ মানুষ বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলন এবং বিকাশে টাকা ক্যাশ-ইন পর্যন্ত আমরা বিকাশ এজেন্ট এর মাধ্যমে করা লাগে। আপনিও চাইলে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগে, বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে এবং বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করলে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায়। বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেল সম্পূর্ণ দেখুন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করার আগে আমাদের জেনে নিতে হবে বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়। কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দেওয়া লাগবে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য। বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেগুলো থাকলে আপনি বিকাশের এজেন্ট হতে পারবেন। তাহপে চলুন দেখে নেওয়া যাক বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়।
- আমাদের সবার মনে একটা প্রশ্ন আসে সেটা হচ্ছে বিকাশ এজেন্ট হতে কি কোন টাকা দেওয়া লাগে? আসলে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনাকে কোন টাকা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু মাত্র আপনাকে ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করে একটা বিকাশের এজেন্ট সিম ক্রয় করতে হবে।
- বিকাশের এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই একটা দোকান থাকা লাগবে। দোকানটি অবশ্যই আপনার নিজস্ব দোকান হতে হবে। দোকানটি এমন যায়গায় হতে যেনো মানুষ সহজে দেখতে পাই এবং এজেন্ট এর ব্যবসা ভালোভাবে চলবে সেটার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
- আপনার পৌরসভা বা ইউনিয়ন কতৃক একটা ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। এর সাথে প্রয়োজন হবে একটা টিন সার্টিফিকেট।
- বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং একটি সিমকার্ড। জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ছবি সত্যায়িত করতে হবে।
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনাদের কি কি জিনিসের প্রয়োজন হবে।
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম
আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা জানবো বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে। একটা ব্যবসা করার আগে আমাদেরকে অনেক কিছু দিক বিবেচনা করতে হয়। তেমনি বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পর আমাদের ঠিক তেমন ব্যবসায় লাভ করার উপায় খুজতে হবে। আপনি যদি উপরে শর্তাবলি পূরণ করার মাধ্যমে বিকাশের এজেন্ট হয়ে থাকেন, তাহলে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আপনার পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে এই সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে।
- বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পর আপনাকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা লেনদেন করতে হবে। আপনাকে প্রতিদিন ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা লেনদেন করতে হবে।
- আপনার এজেন্ট অ্যাকাউন্টে সর্বনিম্ন ৭,০০০ (সাত হাজার) টাকা রাখতে হবে। সাত হাজার টাকা কাছাকাছি আসলে আপনাকে আবার টাকা লোড করতে হবে।
- বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পর আপনার অ্যাকাউন্টে ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা ডিপোজিট করতে হবে।
- চেষ্টা করবেন আপনার সে এলাকার মানুষদেরকে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার। বিকাশ একাউন্ট খুলে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি কিছু টাকা কমিশন পাবেন। এখন যেহেতু ঘরে বসে সবাই বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে তাই এইটার আশা না করাই ভালো।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা
আমাদের সবার মনে একটা প্রশ্ন আসে সেটা হচ্ছে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করলে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায়। যারা বিকাশ এজেন্ট হয়েছেন বা হওয়াএ চিন্তা করতেছেন তাদের এই বিষয়ে জানা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ এজেন্ট হলে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায়। বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:-
- আপনি যদি *২৪৭# দিয়ে বিকাশে লেনদেন করে থাকেন, তাহলে আপনি প্রতি ১০০০ টাকার বিপরীতে কমিশন পাবেন ৪.১০ টাকা। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাবেন ৪.১০ টাকা, ১০,০০০ টালা লেনদেন করলে কমিশন পাবেন ৪১ টাকা, ১০০,০০০ টাকা লেনদেন করলে কমিশন পাবেন ৪১০ টাকা।
- আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ থেকে লেনদেন করে থাকেন, তাহলে আপনি প্রতি ১০০০ টাকা লেনদেন করার বিপরীতে কমিশন পাবেন ৪.৫০ টাকা। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাবেন ৪.৫০ টাকা, ১০,০০০ টালা লেনদেন করলে কমিশন পাবেন ৪৫ টাকা, ১০০,০০০ টাকা লেনদেন করলে কমিশন পাবেন ৪৫০ টাকা।
- বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পর আপনাকে একটা বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ দেওয়া হবে। এই অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি নিরাপদে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি যেকোন বিল পরিশোধ করতে পারবেন। এইখান থেকেও আপনি একটা কমিশন পাবেন। তাছাড়া আপনার প্রতিদিনের লেনদেনের তালিকা দেখতে পারবেন। যেটার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন কত টাকা লেনদেন হয়েছে।
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় কি পরিমান কমিশন পাওয়া যায়। বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বিকাশের ব্যবসা করার ১০ টি উপায়
আপনারা ইতোমধ্যে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য কি কি প্রয়োজন, বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এবং বিকাশের এজেন্ট কমিশন কতা টাকা সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এখন আমরা জানবো বিকাশ ব্যবসা করার ১০ টি নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:-
- বিকাশের এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য প্রথমে আপনাকে নিজস্ব দোকান দিতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমানে মূলধন রাখতে হবে। যেনো বিকাশের এই ব্যবসা অনেক সময় ধরে পর্যন্ত করা যায়।
- চেষ্টা করবেন আপনার আশে পাশের মানুষকে বিকাশ একাউন্ট করে দেওয়ার জন্য। এতে আপনার দোকানে কাস্টমার বৃদ্ধি পাবে।
- কৌশল এর মাধ্যমে বিকাশের লেনদেন বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। কাস্টমারদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন, যেন আশে পাশে অন্য দোকান থাকলেও আপনার দোকানে লেনদেন করে।
- ব্যবসায়িক এলাকা বা বাজার এলাকা, যেখানে মানুষ এর যাতায়াত বেশি এইসব যায়গায় বিকাশের দোকান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফলতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন হবে আপনার মনোবল। কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করবেন।
- আপনার ব্যাক্তিগত লেনদেন গুলো আপনার এজেন্ট একাউন্ট দিয়ে করবেন। এতে করে আপনি কমিশন পাবেন এবং প্রতিদিনের লেনদের টার্গেট পূরন করতে পারবেন।
- নিয়মিত বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করুন। কারণ বিকাশ এজেন্ট অ্যাপে কমিশন বেশি পাওয়া যায়।
- বিকাশের প্রতিটি লেনদেন সতর্কতার সাথে করবেন। প্রতিটি লেনদেন সম্পূর্ণ করার পর আপনার ব্যালেন্স চেক করুন।
- চেষ্টা করবেন আপনার মূলধনের পরিমান বাড়ানোর জন্য। আপনার পাওয়া কমিশন থেকে চাইলে মূলধনে কাজে লাগাতে পারেন কিছু। এতে করে আপনার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
আমাদের শেষ কথা
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার ১০ টি কার্যকরী নিয়ম সম্পর্কে। আমরা আলোচনা করেছি বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগে, বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এবং বিকাশ এজেন্টে কত কমিশন পাওয়া যায় সে সম্পর্কে। বিকাশ এজেন্ট সম্পর্কে আপনাদের আর কোন মতামত থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমরা সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের সাহায্য করবো।
রায়হান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url