কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা
তুলসী পাতার উপকারিতা কী কী জেনে নিন
কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা- আমাদের আর্টিকেলের আজকের বিষয় কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে। কাঠবাদামের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।
ভূমিকা
কাঠবাদামের পুষ্টিগুন সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। কাঠবাদাম আমাদের সকলের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি খাদ্য উপাদান। আমরা সবাই এটি খেয়ে থাকি। এই কাঠবাদের রয়েছে অসাধারণ উপকারিতা। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন-ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, কপার, আয়রন, এর মত আর অনেক রকমের ভিটামিন। যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। কাঠবাদামের ৪০ টি উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।
কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা
আমরা যদি নিয়মিত কাঠবাদাম খাই তাহলে আমাদের শরীরের অনেক উপকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরণের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাঠবাদাম শরীরের জন্য অতি উপকারি খাদ্য। এটি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুজত রাখতে সাহায্য করে। কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো।
১। আমরা যারা উচ্চ রক্তচাপ রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য কাঠবাদাম বেশ উপকারি। কাঠবাদাম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রেখে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে থাকে
২। যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তাদের জন্য কাঠবাদাম বেশ উপকারি খাদ্য। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। কাঠবাদামের পুষ্টি উপাদান গুলো বিভিন্ন ভাবে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। এতে শরীরের মধ্যে থাকা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল গুলো দূর করে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে থাকে যা হার্টের জন্য খুবই উপকারী।
৩। ওজন কমাতে কাঠবাদাম আমাদের অনেক সাহায্য করে থাকে। আমরা অনেকে মনে করি কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু না, নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ওজন কমে যায়।
৪। কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে কাঠবাদাম সাহায্য করে। কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ফলে হৃদরোগর মাত্রা বেড়ে যায়। কোলেস্টেরল ঠিক রাখতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
৫। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে স্ট্রোকের সমস্যা দূর হয়ে যায়। স্ট্রোক বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। যেমন, ওজন বেড়ে গেলে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদির সমস্যার কারণে। স্ট্রোক নিয়ন্ত্রনে রাখতে নিয়মিত কাঠাবাদাম খেতে পারেন।
৬। কাঠবাদাম হজম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। হজম ঠিক রাখতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
৭। আমাদের অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে। যাদের এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে থাকে।
৮। কাঠবাদাম আমাদের শরীরের হাড় গুলো মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে। কারণ কাঠবাদামে রয়েছে প্রোটিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, জিংক এর মত উপাদান সমূহ যা আমাদের হাড় গঠনে সাহায্য করে থাকে।
৯। কাঠবাদাম হাড় মজবুতের পাশাপাশি আমাদের দাঁঁতের ও বেশ উপকার করে থাকে। দাঁত মজবুত রাখতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
১০। কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। কোলন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
১১। মেয়েদের স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে কাঠবাদাম বেশ সাহায্য করে থাকে। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে নিয়মত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
১২। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে, কারন কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি ও মিনারেলস যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে শক্তিশালী করে থাকে।
১৩। কাঠবাদাম শরীরের কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি যা শরিরের কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১৪। নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের উন্নতি হয়ে থাকে।
১৫। কাঠবাদাম আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষ্মতা বাড়িয়ে তুলে।
১৬। কাঠবাদাম গর্ববতী মায়েদের জন্য বেশ উপকারী। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে গর্ভস্থ সন্তানের জন্মগত ত্রুটি হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
১৭। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটাইন-ই যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
১৮। কাঠবাদাম এর তেল মেকআপ দূর করতে ব্যপক ভূমিকা রাখে। একটি টিস্যুতে হালকা বাদামের তেল ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করলে খুব সহজেই ত্বক পরিষ্কার হয়ে যায়।
১৯। কাঠবাদামের তেল চোখের নিচে হওয়া কালো দাগ সারাতে সাহায্য করে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেনো চোখের মধ্যে তেল না যায়।
২০। কাঠবাদামের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি যা চুল নরম ও তুলতুলে করতে সাহায্য করে।
২১। কাঠবাদামের তেল চুলের রুক্ষ ভাব ও চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি এর মত উপাদান সমূহ।
২২।কাঠবাদামের তেল চুল মজবুত ও আকর্ষনীয় করে তুলতে সাহায্য করে।
২৩। আমাদের অনেকের কোকড়ানো চুল রয়েছে। যারা কোকড়ানো চুল সোজা করতে চান তারা কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
২৪। মাথার ত্বকে প্রতিদিন ধুলাবালি ডুকার কারণে এলার্জি জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা দূর করার জন্য কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
২৫। কাঠবাদামের তেল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে।
২৬। কাঠবাদাম আমাদের শারিরীক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
২৭। কাঠবাদাম মনোপজকালীন সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করে থাকে। সাধারণত নারীদের ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যেই মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এটিকে মেডিকেলের ভাষায় মনোপজ বলা হয়ে থাকে। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে মনোপজকালীন সমস্যা কিছুটা কম হয়ে থাকে।
২৮। কাঠবাদামের তেল আমাদের জ্বর কমাতে সাহায্য করে থাকে।
২৯। পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যপক ভূমিকা রাখে কাঠবাদাম। প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাঠবাদাম খেতে পারেন।
৩০। শীতকালে আমাদের চুলের খুশকীর সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুশকীর সমস্যা দূর করতে নিয়মিত কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করুন।
৩১। কাঠবাদাম ত্বক পরিষ্কার করতে বেশ কার্যকরী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রথমে কয়েকটি কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে পেস্ট করে নিন, এর সাথে ১ চামচ পরিমাণ টক দই এবং ১ চামচ পরিমান মধু মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিন। এর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন, এর ফলে ত্বক ভেতর থেকে ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৩২। তারুণ্য ধরে রাখতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পার্বেন।সামান্য পরিমানে কাঠবাদামের তেল রাতে মুখে লাগিয়ে রাখুন এরপর সকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলবেন।
৩৩। কাঠবাদাম স্ক্রাবার হিসেবেও কাজ করে থাকে, পেস্ট করা কাঠবাদামের সাথে মধু এবং টক দই মিশিয়ে মুখে ম্যাসেজ করুন এর ফলে ত্বকের মৃত কোষ গুলো দূর হয়ে যাবে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
৩৪। যাদের ত্বকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব চলে আসে তাদের জন্য কাঠবাদাম বেশ উপকারী। যাদের এই সমস্যা টা আছে তারা কাঠবাদামের তেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
৩৫। কাঠবাদামের তেল নাকের মধ্যে থাকা ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে থাক। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে নাকের ব্ল্যাকহেডস গুলো কমে যায়।
৩৬। যাদের মুখের ব্রণের সমস্যা আছে তারা কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। ব্রণ অনেক পরিমানে কমে যাবে।
৩৭। কাঠবাদামের দুধ শরীরের জন্য বেশ উপকারী। নিয়মিত কাঠবাদামের দুধ খেলে শরীর ঠিক থাকে।
৩৮। কাঠবাদাম কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩৯। মাংস রান্নার স্বাদ দ্বিগুন করতে মাংসের মধ্যে কাঠবাদাম পেস্ট করে দিতে পারেন। আপনি চাইলে অন্য যেকোন তরকারিতে বাদামের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।
৪০। কাঠবাদাম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। কারণ এর মধ্যে রয়েছে খুব অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, যা খুব সহজেই রক্তের সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা ক্যালোরির চাহিদা মেটাতে পারে।
কাঠবাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা কাঠবাদাম বিভিন্ন ভাবে খেতে পারি। আমরা কাঠবাদাম আগুনে পুড়ে বা ভেজে খেতে বেশি পছন্দ করে থাকি কিন্তু কাঠবাদাম কাঁচা অবস্থায় খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। কারণ কাঠবাদামে যে পানি রয়েছে তা আগুনে পুড়লে বা ভেজে খেলে পানি গুলো থাকে না। ভাজা বা আগুনে পুড়া কাঠবাদামে সে পানি গুলো পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা চেষ্টা করব কাঠাবাদাম কাঁচা খাওয়ার।
সত্যি কথা বলতে কাঁচা বাদামের চেয়ে ভাজা বাদাম খেতে অনেক মজা হয়ে থাকে যার কারণে আমরা কাঁচা বাদাম খেতে চাই না। তবে পুষ্টির কথা চিন্তা করে কাঁচা কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কাঠবাদাম বেটে মাংস দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায় এটি অনেক মজাদার হয়ে থাকে।
খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
আমরা কাঠবাদাম বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। কিন্তু কাঠবাদাম খালি পেটে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। রাতে কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাওয়ার ফলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এর ফলে আমাদের পাকস্থলী ও হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। তাই আমরা চেষ্টা করবো কাঠবাদাম সকালে খালি পেটে খাওয়ার। সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করব।
আমাদের শেষ কথা
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০টি উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা আরো বলেছি কাঠবাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টে বলতে পারবেন। আমরা যথাযথ উত্তর দিয়ে আপনাদের সাহায্য করবো।
রায়হান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url